সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:০০ অপরাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী:
গত মাসের ৯ তারিখে মুসলিম শিক্ষার্থীদের হিন্দু ধর্ম ও পূজা অর্চনার শিক্ষা দিয়ে ক্লাশ করিয়েছেন এবং তাদেরকে স্কুল পরিদর্শকের সাথে হিন্দু বলে পরিচয় করে দেয়া নিয়ে একাধীক স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকা-সহ বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টালে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এনিয়ে অভিভাবকসহ স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয় এবং আঞ্চলিক শিক্ষা কর্মকর্তা ড. শরমিন ফেরদৌস চৌধুরী’কে অবগত করেন। অবগত হওয়ার পর আঞ্চলিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিষয়টি দ্রæততার সহিত তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা শিক্ষা অফিসার নাসিরুদ্দিন কে অফিস আদেশ দেন। পরে বিষয়টি নিয়ে গত ২ নভেম্বর বৃহস্পতিবারে স্থানীয়রা কয়েকজন সাংবাদিকদের নিয়ে রাজশাহী আঞ্চলিক শিক্ষা কর্মকর্তা ড. শরমিন ফেরদৌস চৌধুরী’র সাথে তদন্তের সর্বশেষ অবস্থা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তদন্ত রিপোর্ট এসেছে দেখার সময় পাইনি। কিন্তু তিনি রিপোর্ট প্রসঙ্গে জানানোর জন্য সাংবাদিকদের বসতে বলেন। এরপর তদন্ত রিপোর্টে তার উল্লেখিত বিষয় বস্তু তিনি পড়ে শোনান।
এ সময় স্থানীয়সহ সাংবাদিকরা তার দেয়া রিপোর্টে নানা অসংগতি আছে বলে প্রত্যাখান করে তারা অভিযোগ করেন এই রিপোর্টে প্রভাবিত হয়ে অসৎ পথ অবলম্বন করেছেন জেলা শিক্ষা অফিসার। প্রকৃত ঘটনা হলো ৬ষ্ঠ এবং ৭ম শ্রেণীতে কোন হিন্দু শিক্ষার্থী নাই। তবে দশম শ্রেণীতে যে ছেলেকে হিন্দু বলা হয়েছে। তার নাম ভিম সাদেক। তাকেই দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে হিন্দু বলে চালানো হচ্ছে। জেলা শিক্ষা অফিসার তদন্ত প্রতিবেদনেমিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন বলে তারা ডিও’র অপসারণ ও শাস্তির দাবিতে শিঘ্রই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি নিয়ে রাস্তায় দাঁড়াবেন বলে জানিয়েছেন। ডিও’র দেয়া রিপোর্ট অনুযায়ী একটি অপরাধের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করে, অপরাধীর পক্ষ নিয়েছেন, এই অপরাধ ক্ষমার অযোগ্য বলে অভিযোগ করেছেন তারা।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, কাব্যতীর্থের শিক্ষক ববিতা শাহকে নিয়োগ দেওয়ার সময় স্কুলে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে ১০০জনের ও বেশি হিন্দু ছাত্র-ছাত্রী দেখানো হয়েছিলো। তারা বলেন, যা কিছু করা হয়েছে সবই টাকার বিনিময়ে। সেই তদন্ত করেছে মাধ্যমিক থানা শিক্ষা অফিসার, বোয়ালিয়া। তিনিই কিভাকে তদন্ত করেছেন সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। একই ধরণের অভিযোগ রয়েছে ক্রীড়া শিক্ষক মোঃ আকরাম হোসেন সরকারের বিরুদ্ধেও। তিনিও প্রায় সম্প্রতী ক্রীড়া শিক্ষককে স্থানীয় ও জাতীয় কোন খেলাধুলা কমিটিতে পাওয়া যায়না। বিগত সময় বেশ কিছু ক্রীড়া সামগ্রী ছিলো। কিন্তু ক্রীড়া শিক্ষকের উদাসিনতা আর অবহেলার কারনে সেই সব সামগ্রীর হদিস নাই। আর এই সমস্ত অপকর্ম চলছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ আনোয়ারা বেগমের ছত্রছায়ায় বলে তারা অভিযোগ করেন।
সরোজমিনে বিদ্যালয়টিতে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষকদের কেউ চায়ের দোকানে আড্ডা দিচ্ছেন, কেউ কেউ নিজেদের খোশ গল্প নিয়ে গল্পে ব্যস্ত। এ ব্যাপারে রাজশাহী জেলা শিক্ষা অফিসার নাসিরুদ্দীনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রভাবিত হয়ে তদন্ত রিপোর্ট করেছেন অভিযোগটি অস্বিকার করে বলেন, তদন্ত শেষে উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা রাজশাহী অঞ্চল ম্যাডামকে রিপোর্ট জমা দেয়া হয়েছে।
এ ব্যপারে জানতে চাইলে উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা রাজশাহী অঞ্চল ড. শরমিন ফেরদৌস চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, মুসলিম শিক্ষার্থীদের হিন্দু ধর্ম শিক্ষা দেয়া এবং পূর্জা অর্চনার শিক্ষা দেওয়ার বিষয়টি মেনে নেয়া যায় না। এ বিষয়ে তদন্ত রিপোর্ট এসেছে। যেহেতু তদন্ত রিপোর্ট সঠিক হয়নি বলে স্থানীয়সহ সাংবাদিকরা দাবি করছেন, তাই পূণরায় তদন্ত দেয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে কাব্যতীর্থের শিক্ষিকার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।